ছেলেটা বেশ মেধাবী। পড়াশোনায়ও সেই ভাল। স্বপ্ন দেখতে দেশের শীর্ষ বিদ্যাপিঠ প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। মেধাবী ছেলে, স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করা যার নেশা, তার জন্য এটা হতেই হবে। সুযোগও চলে এল। স্বপ্নের বিভাগ অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস এ পড়াশোনা শুরু হল।
তবে এর পাশা পাশি একটা নেশাও যে ছিল তার, আর তা হচ্ছে ক্যামেরা। একটা গ্রুপ, গ্রুপের সকলেই মিলে বিভিন্ন জায়গায় যেতেন তারা। দেশের গন্ডি পেরিয়ে আজকে কাশ্মীর কালকে নেপাল, আবার কখনওবা ভারত। অর্জন করলেন বেশ কিছু পুরস্কার। এ সময়ে ছবি তোলার পাশাপাশি প্রামাণ্য চিত্র এবং বিজ্ঞ্যাপনেরও কিছু কাজ শুরু করেছেন তিনি। এভাবেই পেরিয়ে গেল প্রায় দশ বছর।
এরপরে এল এক মহেন্দ্রক্ষণ। সুযোগ পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমিতে পড়াশোনা করার। দু বছর সেখানে কাটালেন। এ সময়ে তৈরি করেছেন বেশ কিছু ফিল্ম। অধিকাংশই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এর মাঝে তিনি তৈরি করলেন তার মা আফরোজা পারভীন এর ছোট গল্প “লাশ” অবলম্বনে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “Deceased”। বার মিনিট এর এ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি তৈরি করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় দশ লক্ষ টাকা।কয়েকটি দৃশ্য হলিউড সুপার স্টার টম ক্রুজ এর বাড়িতে ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া হলিউডে গ্রাম-বাংলার দৃশ্য তৈরি করাটাও ছিল একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। আর সে চ্যালঞ্জ তিনি অতিক্রম করেছেন খুব ভালভাবেই। শুট করেছেন RED ক্যামেরা দিয়ে।
বাংলাদেশ, আমেরিকা, নেপাল, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডে প্রদর্শিত হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “Deceased।” এ ফিল্মের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বেশ কয়েকটি পুরস্কার।
কালার ব্লাইন্ড স্টুডিওতে এক আড্ডায় তিনি দেখালেন, স্ক্রিপ্ট। একটা ফিল্মের জন্য কি পরিমাণ পরিশ্রম করেছেন, তা কেবল স্ক্রিপ্ট দেখলেই বোঝা গেল। বার মিনিটের এ ফিল্মের জন্য প্রায় ২৫০ পাতার ডকুমেন্ট তৈরি করা হয়ছে।
যখন তিনি জানতে পারলেন তার এ ফিল্মটি ওয়ার্নার ব্রাদার্সে প্রদর্শিত হবে, তখন তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। এভাবে তার স্বপ্ন পুরণ হবে, হয়ত স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেন নি তিনি। স্বপ্নপূরণের অনুভূতিটা কেমন? পান্থ রহমানের ভাষায়, ‘ভয়ংকর!’ ছবির প্রদর্শনী দেখার পর তাঁর সহপাঠী, শিক্ষক এবং দর্শকদের প্রশংসাতে ভেসেছেন।
এখন তিনি ঢাকায় করেছেন নিজস্ব প্রোডাকশন হাউস। ব্যস্ত রয়েছেন নাটক ও টিভি সিরিয়াল নিয়ে। সেই সাথে তৈরি করছেন কয়েকটি ওয়েব সিরিজ। এবার ঈদ-উল-ফিতরে যে সকল নাটক তৈরি হয়েছে, তার মাঝে অন্যতম “ওপারে বসন্ত” এটির ডিওপি হিসাবে কাজ করেছেন।